চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার

আপনারা হয়তো পোস্টে টাইটেল দেখে বুঝতে পেরেছেন আমরা আপনাদেরকে আজকে কি বিষয়ে বলতে চলেছি! এখানে আমরা আপনাদেরকে কারী পাতার ব্যবহার সম্পর্কে জানাবো। কারি পাতার উপকারিতা। চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার এগুলো বিষয় থাকবে আজকে আমাদের মুখ্য বিষয়।

আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদেরকে কারি পাতার ব্যবহার সম্পর্কে জানাবো। কারি পাতা যেভাবে করে আপনারা ব্যবহার করবেন। এই পাতা দিয়ে তেল বানানো যায়। এ সকল বিষয় আজকে আমরা আপনাদেরকে জানাবো।

পেজ সূূচিপত্রঃ চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহারসমুহ

চুলের যত্নে কারি পাতার ব্যবহার

কারি পাতা ভিটামিন - এ এবং প্রোটিনের সংমিশ্রণে তৈরি একটি উৎস যা চুলকে শক্তিশালী করে এবং চুলকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। এটি চুলের প্রাকৃতিক কালো রং কে ধরে রাখে এবং বজায় রাখার মাধ্যমে চুলের অসময়ে পাকা হওয়া থেকে বাঁচাই। কারি পাতা বহুল পরিচিত একটি ভেষজ পাতা।পূর্বে মানুষ এই পাতা দিয়ে অনেক সমস্যার ঔষধি ভাবে সমাধান করেছে। এমন অনেক মানুষ আছে যারা এখনও এই পাতার সঠিক ব্যবহার জানে না। ডাক্তারেরা অনেক রুগীদের এই পাতার ব্যবহারের জন্য উপদেশ দিয়ে থাকে।

আমরা চাইলে এই পাতা দিয়ে অনেক সমস্যার সমাধান করতে পারি। ঘরে বসেই আমরা এই পাতার ব্যবহার করতে পারি। এটিকে তেল বানিয়েও আমরা আমাদের চুলে ব্যবহার করতে পারি।এই পাতা ব্যবহার করলে চুল গোরা থেকে শক্ত হবে। তার সাথে চুলের আগা ও নষ্ট হবে না বা ফেটে যাবে না।     

কারি পাতা ব্যবহার করে যেভাবে চুল লম্বা করা যায়

আমাদের মধ্যে অনেকে আছে যাদের অনেক কম বয়সে চুল পড়া শুরু করে আবার এমন ও আছে যাদের মাথায় চুলের ঘনত্বটাও কম। এখানে তাদের কিছুতা জেনেটিক বিষয় কাজ করে আবার আবহাওয়াও কারন হয়ে দাড়ায়। অনেকে এই সমস্যার জন্য হতাশাই দিন পাড় করে।কারি পাতা ব্যবহার করে উল্লেখিত সকল সমস্যা সমাধান করা সম্ভব।
কারি পাতা ঘরে বসেই আপনি চুলের যত্ন করতে পারবেন।যদি সঠিক কৌশল জেনে বুঝে কারি পাতার ব্যবহার করতে পারেন, তাহলে আপনাকে আর ভুগতে হবে না। নিচে কৌশল গুলো দেওয়া হল 
  • কারি পাতা এবং দই দিয়ে চুলের প্যাক তৈরি করতে হবে। ১ চা চামচ কারি পাতা পেস্টের সাথে ২ চা চামচ টক দই মিশিয়ে চুলে লাগাতে হবে। ৪০-৫০ মিনিট অপেক্ষা করে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। 
  • নারকেল তেলের সাথে কারি পাতা মিশিয়ে ডিপ কন্ডিশনিং তৈরি করুন। চুলের ভিতর পুষ্টি জোগান দিবে।
  • কারি পাতা এবং নারকেল তেল দিয়ে তেল তৈরি করুন। 
  • চুলের আগায় শুধু কারি পাতা পিষে রস লাগিয়ে রাখুন।    

কারি পাতার তেল বানানোর পদ্ধতি

কারি পাতার উপকারিতা অনেক। কারি পাতা দিয়ে অনেক রকম সমস্যার সমাধান করা যায়। যেমন চুলের ঘনত্ব বাড়ানো এবং চুলের গোড়া মজবুত, চেহারার উজ্জ্বলতা আনা এবং ব্রণ কমানো্, বিভিন্ন তরকারিতে কারি পাতার ব্যবহার। মোটামুটি সকল ক্ষেত্রে কারি পাতা ব্যবহার করা যায়। তার মধ্যে অন্যতম হলো কারি পাতার তেল। ঘরে বসেই কারি পাতা তেল তৈরি করা যায়। কারি পাতা তেল তৈরি করতে কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে।

 বাড়িতে যেভাবে বানাবেন কারি পাতার তেল-
১ কাপ কারি পাতা ধুয়ে শুকিয়ে নিন। এবার একটি জায়গায় ১ কাপ নারকেল তেল দিয়ে গরম করুন। এর পরে  নাড়তে নাড়তে ২০ থেকে ২৫ মিনিট পর আধ চা চামচ কালো জিরার বীজ এবং মেথি বীজ একসাথে করে মিশিয়ে দিন। এরপর একটি পাত্রে ছেঁকে ঠান্ডা করতে দিন। এইভাবে করে আপনি কারি পাতা দিয়ে তেল তৈরি করে নিতে পারবেন ঘরে বসেই।

কারি পাতার যা যা ব্যবহার রয়েছে

আমরা ইতিমধ্যেই বলেছি যে কারি পাতাতে বিভিন্ন রকম কাজ করা যায়। তার মধ্যে সবথেকে অন্যতম কাজ হল কারি পাতা তেল এবং চুলে তার ব্যবহার। মূলত চুলের ব্যবহারের জন্যই কারি পাতার প্রচলন। বেশিরভাগ ভারতীয় মানুষেরা এই পাতার ব্যবহার করে থাকে বিভিন্ন কাজে। আমাদের দেশেও এটির ব্যবহার অনেক।

কারি পাতার উপকারিতা অনেক বেশি। কারি পাতার রান্নার কাজে বেশি ব্যবহৃত হয়। কারি পাতা দিয়ে যেমন স্যুপ রান্না করা যায় আবার তরকারিতে দেওয়া যায় এছাড়াও চাটনি, ডাল, ভাজা , সুজি ইত্যাদি খাবার ব্যবহার হয়। স্বাস্থ্যের উপকারিতা দিক থেকেও কারি পাতার ব্যবহার অনেক। যেমন-এটি হজম শক্তি বাড়ায়, দৃষ্টিশক্তি , দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ রয়েছে যা দেহের ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ করে।

কারি পাতা দিয়ে ত্বক সুন্দর করার উপায়

কারি পাতার ব্যবহার অনেক। কারি পাতা দিয়ে ত্বক সুন্দর করার জন্য ফেসপ্যাক তৈরি করা যায়। এগুলি ত্বককে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। কারি পাতা দিয়ে তৈরি ফেসপ্যাক লাগালে মুখের দাগ দূর হয়, ত্বক উজ্জ্বলতা বাড়ে এবং ব্রণের আশঙ্কা আস্তে আস্তে কমে যায়। কারি পাতার তৈরি পেস্ট ত্বকের জন্য অনেক উপকারি।কারি পাতার পেস্ট সাথে গোলাপ জল মিশিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করা যায়। এই পেস্ট দিয়ে আবার আরো কাজ করা যায় যেমন এটার সাথে দুধ মিশালে আরেক ধরনের ফেসপ্যাক তৈরি করা যায়।

কারি পাতার চাও অনেক সুস্বাস্থ্যকর। কারি পাতা পানিতে কিছুক্ষণ ফুটিয়ে নিয়ে ছাকনি দিয়ে ছেঁকে তরল অংশটি চা হিসেবেও পান করা যায়। যা শরীরের ক্লান্তি দূর করে, শরীরকে সতেজ রাখতে সাহায্য করে। আমাদের সকলের উচিত কারি পাতার যথাযথ ব্যবহার করে আমাদের সকলকে সুস্বাস্থ্য অধিকারী হওয়া।

ডায়াবেটিকস নিরাময়ে কারি পাতার ব্যবহার

ডায়াবেটিস রোগীদের কারি পাতা চিবানো উচিত ৷ এটি দেহে সুগারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখে । রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা হঠাৎ কমে গেলে তা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে কারি পাতা । হজম শক্তি বৃদ্ধি, কারি পাতা উপস্থিতিতে শরীরের ভাইরাস গুলি শেষ হয়ে যায় এবং এই প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী রাখে ।কারি পাতার প্রধান বৈশিষ্ট্য হল অ্যান্টি-ডায়াবেটিক। 
কারি পাতার সবচেয়ে বড় স্বাস্থ্য উপকারিতা হল এটি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা রাখে।

একজনের খাদ্যতালিকায় কারি পাতা ব্যবহার থাকলে সে মানুষের ডায়াবেটিসের কোন ওষুধ অথবা ইনসুলিনের প্রয়োজন হবে না। কারি পাতার ব্যবহারে হৃদরোগের সমস্যাগুলো ধীরে ধীরে কমে আসে। সুতরাং আমাদের সকলের উচিত কারি পাতাকে যথাযথ আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার করা।

কারি পাতা চেনার উপায়

কারি গাছ আমাদের বহুল পরিচিত একটি গাছ। এটি দেখতে নিমপাতা মতো হলেও এটির স্বাদ নিম পাতার থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। নিম পাতা ও কারি পাতার মধ্যে অনেকটাই মিল রয়েছে দেখতে গেলে। তবে যেদিকে নিমপাতার স্বাদ তেতো অন্যদিকে কারি পাতার মধ্যে একটি ঝাড়ালো ও মিষ্টি গন্ধ রয়েছে। নিমপাতা দিয়ে মূলত ভেষজ ওষুধ তৈরি করা হয় কিন্তু কারি পাতা দিয়ে ওষুধের পাশাপাশি বিভিন্ন খাবারে এবং শরীরচর্চার বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়। সঠিক নিয়ম জানা থাকলে এটি ব্যবহার করলে অনেক উপকার পাওয়া যায়।

কারি পাতা খাওয়ার নিয়ম

কারি পাতা মূলত একটি স্বাস্থ্যকর জাতীয় খাবার। এটি বিভিন্নভাবে খাওয়া যায়। অনেকে আছে যারা কারি পাতাকে তরকারির সাথে মিশিয়ে খায়, আবার অনেকে আছে যারা সরাসরি চিবিয়ে খেয়ে নেয়। এটি খাওয়ার কয়েকটি নিয়ম আছে। কারি পাতা সকালে খালি পেটে খাওয়া যায় এটি স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। কারি পাতার রস চায়ের মত করে পান করা যায়। তরকারিতেও এটির বহুল ব্যবহার রয়েছে। যেমন-বিভিন্ন শাকসবজিতে এবং বিভিন্ন সালাদে কারি পাতা রান্না করে খাওয়া যেতে পারে।

প্রতিনিয়ত কারি পাতা খাইলে বদহজম ধীরে ধীরে কমে যাবে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। অসুস্থ রোগীদেরকে আমরা এই পাতা খাওয়াতে পারি। 
  • এটি রক্তের কার্যক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করে
  • ওজনের ভারসাম্য ঠিক রাখে
  • শরীরের ব্যাকটেরিয়া জনিত অসুখ দূর করে
  • চোখের জ্যোতি বাড়ায়
  • বিপাক স্বাভাবিক রাখে
  • শরীরকে উজ্জীবিত করে

কারি পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা

কারি পাতা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী এবং পুষ্টি সমৃদ্ধ একটি পাতা। এই পাতাতে ভিটামিন এ বি সি ডি ইত্যাদি থাকে। কারি পাতার উপকারিতা অনেক ।
কারি পাতার উপকারিতা-
  • কারি পাতা ত্বকের উজ্জ্বলতা উৎপাদনে সহায়তা করে
  • গাড়ি পাতা ব্যবহারে ওজন কমে
  • কারি পাতা চোখের জন্য অনেক ভালো
  • কারি পাতা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অনেক উপকারী
  • কারি পাতা হজম শক্তি বাড়ায়
  • গাড়ি রক্তের কোলেস্টরেল মাত্রা কমাতে সাহায্য করে
  • কারি পাতা চুলের গোড়া শক্ত এবং চুলকে ঘন করে
  • কারি পাতা সেবন করলে ব্যাকটেরিয়া দূর হয়

পরিশেষে

উল্লেখিত বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে বুঝা যায় কারি পাতার অপকারিতা থেকে কারি পাতার উপকারিতা অনেক। কারি পাতার অপকারিতা নাই বললেই চলে। আমার ব্যক্তিগত মন্তব্য অনুযায়ী আমি সবাইকে উপদেশ দিবো। আমাদের বিভিন্ন খাবারের মধ্যে কারি পাতার ব্যবহার করা দরকার। জীবনে বর্তমান পৃথিবীতে সুস্বাস্থ্য ভাবে চলতে গেলে সুস্বাস্থ্য খাবার খাওয়া অত্যন্ত জরুরী। সেজন্য এক্ষেত্রে কারি পাতা অনেক বেশি ভূমিকা রাখে।

অন্তত সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরে গাড়ি পাতার রস পান করা উচিত। বিভিন্ন খাবারে কারি পাতার ব্যবহার করা উচিত। আমরা যদি ধীরে ধীরে এটির ব্যবহার আমাদের মধ্যে নিয়ে আসি তাহলে একটা সময় আমরা সকলে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হব।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url