মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার নিয়ম- এই পাউডারের উপকারিতা
আপনার যদি জানতে চান মরিঙ্গা পাউডারের খাওয়ার নিয়ম তাহলে আপনারা সঠিক জায়গায় এসেছেন। এখানে আপনাদেরকে জানাবো কিভাবে করে মরিঙ্গা পাউডার খাইতে হয় এবং মরিঙ্গা পাউডার কিভাবে তৈরি করা হয় মরিঙ্গা পাউডারের খাওয়ার সময় এই পাউডারের উপকারিতা কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া আছে কিনা সকল বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে আপনাদেরকে জানানো হবে।
মরিঙ্গা পাউডারের গুরুত্ব আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কতটুকু অস্তিত্ব রাখে সে বিষয়ে এই পোস্টে উদাহরণসহ ব্যাখ্যা করা হবে। আমাদের মধ্যে অনেকে আছে যে যারা এই পাউডারের সঠিক ব্যবহার জানে না আসলেই পাউডারটা কি এটাও জানেন। তাই সকলের উদ্দেশ্যে এই আর্টিকেলে আমি মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার নিয়ম সহ সকল কিছু জানাবো।
পেজ সূচিপত্রঃ মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার সঠিক নিয়ম সমূহ
- মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার নিয়ম
- মরিঙ্গা পাউডার তৈরি করার নিয়ম
- মরিঙ্গা পাউডার ক্যাপসুল খাওয়ার নিয়ম
- মরিঙ্গা পাউডার ত্বকের জন্য উপকারী
- মরিঙ্গা পাউডার খেলে কি লম্বা হওয়া যায়
- মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার উপকারিতা
- মরিঙ্গা পাউডার কোথায় পাওয়া যায়
- মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার সময়
- মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার পর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
- লেখকের মন্তব্য
মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার নিয়ম
সজিনা গাছের পাতাকে অত্যাধুনিক মেশিনে কুচি কুচি করে কেটে যে গুড়া তৈরি করা
হয় সেগুলোকে সজিনা পাতার গুড়া বা মরিঙ্গা পাউডার বলা হয়। মরিঙ্গা পাউডার
এর উপকারিতা অনেক। মরিঙ্গা পাউডারের সাথে একটুখানি মধু এবং লেবু মিশিয়ে তৈরি
করা যাবে চমৎকার পুষ্টিকর খাবার যা আপনাকে রাখবে সজীব ও প্রাণবন্ত। শরীরের
হাড়ের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে, রক্তের সঞ্চালন শক্তি বাড়িয়ে দেয়। এইরকম আরো
অনেক উপকারিতা রয়েছে এই পাউডারের।
কয়েকভাবে এই মরিঙ্গা পাউডার খাওয়া যাইতে পারে।
- পানিতে ১০-২০ গ্রাম মরিঙ্গা পাউডার মিশিয়ে সন্ধ্যা বা বিকালের নাস্তায় খাওয়া যায়।
- সকালে খালি পেটে খাওয়া যেতে পারে।
- স্বাদের জন্য জিরার গুড়া অথবা মধু মেশানো যেতে পারে।
- জুস বা সুপ বানিয়ে খাওয়া যায়।
- প্রতিদিনের তরকারি রান্নায় ব্যবহার করা যায়।
মরিঙ্গা পাউডার তৈরি করার নিয়ম
মরিঙ্গা পাউডার তৈরি করার বেশ কিছু নিয়ম রয়েছে। সহজে সজিনার পাতা কেটে
কুচি করে পাউডার বানানো যায় না। পাউডার বানানোর জন্য একটি বিশেষ অত্যাধুনিক
মেশিন রয়েছে সে মেশিনের ভিতরে কুচি কুচি করে পাউডার করা হয়। সজিনা গাছের
পাতা কুচি করে কেটে মরিঙ্গা পাউডার তৈরি করা হয়। এই পাউডার পানিতে মিশিয়ে
বা চা করে খাওয়া যায়।মরিঙ্গা পাউডার কিছু তৈরির নিয়ম রয়েছে।
প্রথমত তাজা সজিনা পাতা সংগ্রহ করুন। তারপর প্রতিটা সজিনা ডাল থেকে
পাতাগুলোকে আলাদা করে নিন। এরপর বিশেষ মেশিনে পাতা কুচি করে কেটে নিন। মেশিনে
কুচি করা হয়ে গেলে বের করে নিন এবং শুকিয়ে নিন। তারপর সর্বশেষে শুকনো পাতা
থেকে মরিঙ্গা পাউডার তৈরি করুন।মরিঙ্গা পাউডারের কয়েকভাবে ব্যবহার করা
যায়।যেমন- মরিঙ্গা পাউডার পানিতে মিশিয়ে খাওয়া যায়, খাঁটি মধু ও লেবুর
সঙ্গে মিশিয়ে পুষ্টিকর পানীয় তৈরি করা যায়।
আরো পড়ুনঃ গ্লুকোজ এর উপকারিতা।
মরিঙ্গা পাউডার ক্যাপসুল খাওয়ার নিয়ম
আমরা এতকক্ষণ জানছিলাম কিভাবে মরিঙ্গা পাউডার বানাতে হয় আর খাওয়ার নিয়ম। এখন
জানবো মরিঙ্গা পাউডার ক্যাপসুল খাওয়ার নিয়ম । সেটা হলো- দিনে দুবার ১-২টি
ক্যাপসুল খেতে হবে। মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার অন্যান্য উপায় হলো:
- আধা বা আধা চা চামচের একটু কম মরিঙ্গা পাউডার দিনে দুবার খাওয়া যেতে পারে।
- মরিঙ্গা জুস দিনে একবার বা দুবার ২-৪ চা চামচ খাওয়া যেতে পারে।
- মরিঙ্গা পাউডার পানিতে মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
- স্বাদের জন্য জিরা গুঁড়া বা মধু মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
- জুস বা সুপ বানিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
- প্রতিদিনের তরকারি রান্নায় মরিঙ্গা পাউডার ব্যবহার করা যেতে পারে।
মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার সেরা সময় হলো খালি পেটে (সকালে প্রথম জিনিস)। এভাবে
খেলে বিষক্রিয়া দূর হয় এবং পুষ্টির শোষণ বৃদ্ধি পায়।
মরিঙ্গা পাউডার ত্বকের জন্য উপকারী
আমরা এখন জানবো মরিঙ্গা পাউডার ত্বকের জন্য আসলে কতটা উপকারী মরিঙ্গা পাউডার
আসলেই ত্বকের জন্য অনেক উপকারী। ত্বকে অর্ধেকেরও বেশি কাজ করে থাকে এই
পাউডার। যেমন-ব্রণ প্রতিরোধে সাহায্য করে, ত্বককে উজ্জ্বল রাখে, ব্রণের কারণে
যে কারো দাগ হয় সেটি কমাতে সহায়তা করে, ত্বকের ডিহাইড্রেট রাখে এবং ত্বকের
সৌন্দর্য বাড়ায় যার জন্য চকচক করে।
বছরের বিভিন্ন সময় আমাদের ত্বকে রুক্ষ ,মেছতা, ব্রণ দেখা দেয়। এই পাউডার
ব্যবহার করলে ত্বকের সকল সমস্যাগুলো দূর হয় এবং ত্বকের লাল ভাবটা কমাতে
সাহায্য করে। সুতরাং আমরা যথেষ্ট চেষ্টা করব মরিঙ্গা পাউডার সকালে এবং
সন্ধ্যায় নাস্তা হোক বা খালি পেটে খাওয়ার চেষ্টা করব।
মরিঙ্গা পাউডার খেলে কি লম্বা হওয়া যায়
মরিঙ্গার পাতা এবং গুঁড়া শরীরের পুষ্টি ঘাটতি পূরণ করতে পারে, যা উচ্চতা বাড়তে
আংশিকভাবে সহায়ক হয়। তবে উচ্চতা বৃদ্ধি মূলত একটি জিনগত, হরমোন, এবং
জীবনযাত্রার সঙ্গে সম্পর্কিত। তাই মরিঙ্গা পাউডার এককভাবে উচ্চতা বৃদ্ধিতে
সহায়ক হবে বিষয়টা আসলে এমন না।মরিঙ্গা পাউডার শরীরকে সুস্থ ও শক্তিশালী রাখতে
ভূমিকা রাখে।
আরো পড়ুনঃ ভোরে হাঁটার কিছু উপকারিতা
মরিঙ্গা পাউডারের থাকা পুষ্টিকর দিকগুলোর কারণে শরীরের বিভিন্ন অংশের
স্বাস্থ্য উন্নত হয়। যেমন বিষক্রিয়া দূর হয়, ওজন কমে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
বাড়ে, হাড় ও পেশির জন্য অনেক উপকারী, ত্বকের উন্নয়ন হয়, চোখের জ্যোতি
বাড়ে, পুষ্টির শোষণ বৃদ্ধি করে ইত্যাদি আরো অনেক শরীরের উপকার করে থাকে।
মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার উপকারিতা
ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে, সংক্রমণ ও অসুস্থতা প্রতিরোধ করার ক্ষমতা
বাড়ায়, হজমের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।মরিঙ্গা পাউডারের উপকারিতা অনেক বেশি,
আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত মরিঙ্গা পাউডার সকালে খালি পেটে একবার খাওয়া, বিকালের
নাস্তাতে একবার খাওয়া। মরিঙ্গা পাউডার রক্তের সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখে, শরীরের
রক্ত নতুন করে তৈরি করে, হাড়ের বিভিন্ন জয়েন্টে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ বেশি
রাখে, শরীর সতেজ ও প্রফুল্ল রাখে।
এক গ্লাস পানির মধ্যে এক চামচ মরিঙ্গা পাউডার মিশিয়ে রোজ দুই বেলা খাইতে হবে
বিভিন্ন ডাক্তার তাদের রোগীদের এই পরামর্শ দিয়ে থাকে এমনকি বড় ডিগ্রীধারী
নামক করা দাক্তাররাও নিজেরা পাউডার খেয়ে থাকে।এটি মূলত সব বয়সের মানুষ
খাইতে পারবে।
মরিঙ্গা পাউডার কোথায় পাওয়া যায়
মরিঙ্গা পাউডার বা সজিনা পাতার গুঁড়া বিভিন্ন অনলাইন ও স্টোরে পাওয়া
যায়।
মরিঙ্গা পাউডার পাওয়া যায় এমন কিছু জায়গা:
- সাস্থোবিধি ডট কম
- দারাজ ডট কম
- ঘোরের বাজার ডট কম
- রকমারি ডট কম
বর্তমানে এটি চাহিদা প্রচুর থাকার কারণে স্বাভাবিক বাজারগুলোতেও পাওয়া যায়
অনেকে মরিঙ্গা পাউডার হিসেবে জেনে থাকে আবার অনেক সজিনার পাতা গুড়া বললেও
চিনে। মরিঙ্গা পাউডারের দাম তুলনামূলক একটু বেশি।
আরো পড়ুনঃ কিডনি ভালো রাখার ১৭টি উপায়।
বর্তমানে এটির দাম এক কেজি ২৪০০ টাকা বেশি থাকায় চলেছে।আধুনিক যুগে মানুষ
ঘোড়ার মত ছুটতে যেয়ে শরীরের প্রতি সেরকম নজরদারি করে না যার জন্য তাদের
শরীরের শক্তি, ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য প্রয়োজন তাই মানুষ এখন মরিঙ্গা পাউডার,
কারি পাতা, আমলকি ইত্যাদি এ সকল স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খেয়ে থাকে।
মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার সময়
স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গুলো একটা নির্দিষ্ট সময় থাকে যে সময়ে সে খাবারগুলো
খাইলে শরীরে উপকারে আসে ঠিক সেভাবে মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার কিছু নিয়ম
ও সময় রয়েছে।মরিঙ্গা পাউডার সকাল-বিকাল খালি পেটে বা নাস্তার পর খাওয়া
যেতে পারে।
মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার পদ্ধতি:
- পানিতে ১০-২০ গ্রাম মরিঙ্গা পাউডার মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
- স্বাদের জন্য জিরা গুঁড়া বা মধু মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
- জুস বা সুপ বানিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
- প্রতিদিনের তরকারি রান্নায় ব্যবহার করা যেতে পারে।
মরিঙ্গা পাউডারের স্বাস্থ্য উপকারিতা: মরিঙ্গা পাউডারে প্রোটিন থাকে,
এতে নয়টি অপরিহার্য অ্যামিনো অ্যাসিড থাকে, পেশী মেরামত এবং বৃদ্ধিতে
সাহায্য করে, সামগ্রিক সেলুলার ফাংশনকে উন্নত করে।
মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার পর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
মরিঙ্গা পাউডার সাধারণত নিরাপদ, তবে এটি খাওয়ার পরে কিছু
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। তবে সেরকম বড় কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হবে না
কারণ এটি একটি স্বাস্থ্যসম্মত খাবার সুতরাং স্বাস্থ্যসম্মত খাবারের
কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয় না।
মরিঙ্গা পাউডারের সুবিধা
মরিঙ্গা পাউডারে পুষ্টিগুণ থাকে।
মরিঙ্গা পাউডারে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে যা শরীরের আয়রনের ঘাটতি পূরণ
করে।
এই পাউডার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
এই পাউডার হাড় ও পেশীর জন্য বহু উপকারী।
এই পাউডার ত্বকের ও ত্বকের ব্রণনের জন্য কার্যকরী।
এই পাউডার চোখের যত্নে সাহায্য করে।
মরিঙ্গা পাউডার খাওয়ার নিয়ম
পানিতে ন১৫-২৫ গ্রাম মরিঙ্গা পাউডার মিশিয়ে খাওয়া যায়।
স্বাদের জন্য জিরার গুঁড়া বা মধু মিশিয়ে খাওয়া যায়।
জুস বা সুপ বানিয়ে খাওয়া যায়।
লেখক এর মন্তব্য
আমার ব্যক্তিগত মন্তব্য থেকে আমি এটাই বলতে পারি যে মরিঙ্গা পাউডার
শারীরিক ও মানসিক দিক দিয়ে একটি অন্যতম স্বাস্থ্যসম্মত খাবার।
এটি মানুষের মন মানসিকতা সাথে সাথে শারীরিক ভাবেও অনেক উপকার করে থাকে। তাই
আমি প্রতিটা মানুষকে একই উপদেশ দিব যে মরিঙ্গা পাউডার দিনে অথবা রাতে দুইবার যদি খান তাহলে সারাদিন ভালো থাকবেন এবং সকলের
অসুখ রোগের নিশ্চয়তা কম থাকবে।
কারন - স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url